Search This Blog

Saturday, March 2, 2013

মুত্রতন্ত্রের সাধারণ রোগ, (Common Diseases of System)




মুত্রতন্ত্রের সাধারণ রোগ, (Common Diseases of System)

কিডনীর গঠন কাজ (Anatomy and Physiology of Kidney):
‍‍‍‍‍িকডনী আমাদের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনী রক্তের বর্জ্য বা খারাপ পদার্থ গুলো বের করে দেয় মানব দেহে দুটি কিডনী রয়েছে কামরের উপরের পেটের একেবারে পেচনের দেয়ালে মেরুদন্ডের দু পাশে দুটোর অবস্থান সীমের বীচির মতো দেখতে প্রতিটি কিডন প্রায় ১২ সেমি লম্বা সেমি চওড়া কিডনীর ওজন একজন পূর্ন বয়স্ক লোকের ক্ষেত্রে প্রায় ১৪০ গ্রাম দুটি কিডনীর প্রত্যেকটিতে প্রায় ১০ লক্ষ নেফ্রন থাকে কাজ অনেকটা ছাকনীর মতো নেফ্রনের প্রধান দুটি অংশ গ্লোমেরুলাস রেনাল টিউবিউল আমাদের শরীরে অনবরত যে জৈব রাসায়নিক ক্রিয়া চলছে, তার ফলে প্রচুর পরিমানে দুষিত পদার্থ এসিড তৈরি হয় কিডনীর সাহায্যে শরীরের এই দুষিত পদার্থ এসিড প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে আসে শুধু তাই নয়, কেউ হয়তো বেশি পানি,অতিরিক্ত লবণ খেয়ে ফেলেন,কিডনী এই অতিরিক্ত লবণ পানি প্রস্রাবের সাথে বের করে দেয় আবার অবস্থা বিশেষে কেউ হয়তো প্রয়োজনিয় পরিমান পানি,লবণ খেতে পারছেন না, সে ক্ষেত্রে কিডনী লবণ পানি সংরক্ষণ করে রক্তে পাটিয়ে দেয় এক কথায় কিডনী হল শরীরের ছাঁকনি এই ছাঁকনি কোন কারনে ক্ষকতগ্রস্থ হলেই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিবে

আমাদের দেহের সাধারন কিডনীর রোগগুলি হচ্ছেঃ
* মূত্রতন্ত্রের সংক্রমন * নেফ্রাইটিস * নেফ্রোটিক সিন্ড্রম * কিডনীর পাথুরি রোগ * কিডনী অকেজো বা রেনাল ফেলিওর হয়ে যাওয়া

লক্ষণ উপসর্গ (Symptom & Sign):
কিডনী রোগ অনেক প্রকার এবং এর লক্ষণ গুলি ভিন্ন ভিন্ন প্রধান প্রধান কিডনী রোগের সাধারণ লক্ষণগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল মুখ, হাত, পা, অথবা সমস্ত শরীর ফুলে যাওয়া ১। এর পরিমাণ কমে যাওয়া,২। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত অথবা প্রোটিন যাওয়া, ৩। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, তলপেটে বা কোমরে ব্যথা হওয়া, কেপে জ্বর আসা ৪। উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত স্বল্পতা ৫। প্রস্রাবের সাথে পাথর বের হওয়া ৬। রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া ৭। খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হওয়া
কিডনী রোগের কারণসমুহঃ * দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস থাকলে * দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপে ভূগলে * স্ক্যাবিস টনসিলের প্রদাহ হলে * একাধিকবার মূত্রণালীর সংক্রমন হলে * কিডনীর পলিসিস্টিক রোগ থাকলে * মূত্রনালীতে কোন অবরোধ বাঁধা থাকলে * ডায়রিয়া হলে, সাপে কামড়ালে, পুরে গেলে, হঠা রক্তচাপ কমে গেলে, কোন ঔষধের পার্শ প্রতিক্রিয়ায় কিডনীর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে

মূত্র তন্ত্রের সংক্রমন ( Urinary Tract Infection-UTI):  মূত্রতন্ত্র যে সব অঙ্গ নিয়ে গঠিত তাদের মংক্রমনকেই মূত্রতন্ত্রের বলে মূত্র তন্ত্রের সংক্রমনকে দুভাগে ভাগ করা যায় মূত্রতন্ত্রের নিচের অংশের সংক্রমন যেমন, মূত্রথলি মূত্রথলির সংক্রমন মূত্রথন্ত্রের উপরিভাগের সংক্রমন যেমন, পাইলোনেফ্রাইটিস অর্থা কিডনী ইউরেটার এর সংক্রমন
মূত্রতন্ত্রের নিচের অংশের সংক্রমন : মূত্রতন্ত্রের নিচের অংশে রয়েছে মূত্রথলি মূত্রনালী দুটির সংক্রমনকে একত্রে মুত্রতন্ত্রের নিচের অংশের সংক্রমন বলে আলাদা আলাদাভাবে মূত্রথলির মংক্রমনকে সিসটাইটিস এবং মূত্রথলির সংক্রমনকে ইউরেথ্রাইটিস বলে এগুলার কারণ লক্ষণ প্রায় একই ধরনের

কারণ (Cause):  সাধারণত -কোলাই, স্টেপট্রোকক্কাই স্ট্রেফাইলোকক্কাই নামক জীবানুর দ্বারা রোগ হয় মূত্রনালীর সক্রমন খুব বেশী হয় মেয়েদের কারণ মেয়েদের মূত্রনালীর  দৈর্ঘ্য ছোট, মেয়েদের মূত্রদ্বার যোনিপথ খুব কাছাকাছি, মাসিক ঋতুস্রাবের সময় অনেক মেয়েরা ময়লা, ছেরা নোংরা জাতীয় কাপড় ব্যবহার করেন,এতে জীবানু প্রথমে যোনিপথে পরে সংলগ্ন মূত্রনালীকে সংক্রমিত করে এবং মেয়েদের প্রস্রাব না করে আটকে রাখার প্রবণতা বেশি, তাই প্রস্রাবে সংক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা বেশী
লক্ষণ উপসর্গ ( Symptom & Sign): মুখ, হাত, পা, অথবা সমস্ত শরীর ফুলে যাওয়া ১। এর পরিমাণ কমে যাওয়া,২। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত অথবা প্রোটিন যাওয়া, ৩। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, তলপেটে বা কোমরে ব্যথা হওয়া, কেপে জ্বর আসা ৪। উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত স্বল্পতা ৫। প্রস্রাবের সাথে পাথর বের হওয়া ৬। রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া ৭। খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হওয়া

জটিলতা (Complication):  সময়মত চিকিৎসা না করালে সংক্রমন কিডনীতে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং তা থেকে কিডনী নস্ট হয়ে যেতে পারে
ল্যাব পরিক্ষা (Investigation): ইউরিনের রুটিন পরীক্ষাকরা দরকার * ইউরিনের কালচার সেনসিভিটি দেখা যেতে পারে
চিকিৎসা (Treatment): রুগীকে প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে

কোট্রাইমক্সাল : ১ থেকে মাস না দেয়া ভালো (প্রয়োজনে  / চা চামচ করে ১২ ঘন্টা পরপর), থেকে ১২ মাস চা চামচ করে ১২ ঘন্টা পরপর, (৭-১০দিন), ১-৫ বৎসর ১/২ চা চামচ করে ১২ ঘন্টা পরপর (৭-১০ দিন), অথবা ট্যাবলেট কোট্রাইমক্সাজল (৪৮০ মিলি) ২ টা করে ১২ ঘন্টা অন্তর, দিনে ২ বার হিসেবে (৫-৭দিন), এমোক্সীসিলিন : ২৫-৫০ মিলি/কেজি/দিন হিসাবে ৮ ঘন্টা পরপর, সিপ্রক্সাইসিন ৫০০মিলি ১ টি ট্যাবলেট ১২ ঘন্টা পরপর ৩-৫ দিন, উপরোক্ত চিকিৎসায় কোন উন্নতি না হলে, রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট পাঠাতে হবে ।
প্রতিরোধ(Prevention): পর্যাপ্ত পানি (বড়দের দিনে কমপক্ষে ১২ গ্লাস ) খেতে হবে । প্রস্রাব অনেক্ষণ আটকিয়ে রাখা যাবে না । মহিলাদের মাসিকের সময় পরিস্কার প্যাড/কাপড় ব্যবহার করা উচিৎ । সহবাসের আগে ও পরে প্রস্রাব করা উচিৎ ।

No comments:

Post a Comment